মেয়ে, আপনাকে যা জানতেই হবেঃ লিউকোরিয়া(সাদা স্রাব)

লিউকোরিয়ার অর্থ হল যোনির স্বাভাবিক স্রাব। তাতে রক্ত থাকবেনা, সংক্রমন জনিত কারনে কোন কটু গন্ধ থাকবে না বা যোনি পথে বা প্রজনন অংগে কোনও চুলকানি বা অস্বস্তি থাকবেনা।
এই স্রাবের জন্য কোনও কনও ক্ষেত্রে অন্তর্বাস ভিজে জায় এবং তা শুকালে দাগ লেগে থাকে । এই স্রাব স্বাভাবিক এবং কোনও রোগজনিত কারনে নয় তাই এর জন্য কোনও চিকিৎসারও প্রয়োজন পড়েনা। যোনির এই আতিরক্ত স্বাভাবিক স্রাবের ব্যাপারটা এক এক মহিলার কাছে এক এক রকম। কোনও মহিলা অল্প স্রাবেই মনে করেন এরকম কেন হচ্ছে, এটা তো স্বাভাবিক নয়, আবার কেউ কেউ অতিরিক্ত স্রাবেও নিরবিকার থাকেন। অনেকে মনে করেন লিউকোরিয়ার জন্যি তার স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যাচ্ছে যদিও তার উলটোটাই ঠিক, অর্থাৎ সাধারন স্বাস্থ্য খারাপ হলে এই স্রাব বড়তে পারে। কোনও কোনও মেয়ে ভাবে এটি কি কোনও যৌনরোগ?
মনে আকঙ্কা নিয়ে তারা চিকিৎসকের কাছে আসে। নারীর জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোনও না কোনও সময়ে অতিরিক্ত স্বাভাবিক স্রাব হতে পারে।

কেন হয়?
বয়ঃসন্ধির পর বা নারীর চাইল্ড বেয়ারিং এজ-এ (অরথাৎ বাচ্চা হতে পারে এমন বয়সেঃ ১৫ থেকে ৪৪ ) যোনির দেওয়াল পুরু থাকে। এখানে কোষের স্তর তার শরীরের স্ত্রী হরমনের মাত্রার উপর নির্ভর করে। যোনিতে এক ধরনের ব্যাসিলাই বা জীবানু স্বাভাবিক ভাবে বসবাস করে। এরা যোনির দেওয়াল থেকে ঝরে পড়া কোষের মধ্যেকার গ্লাইকোজেনকে ল্যাকটিক এসিডে রূপান্তরিত করে। এই ল্যাকটিক এসিড যোনির পি-এইচ ঠিকঠাক বাজার রাখে এবং এই কারনে মেয়েদের যোনির এক স্বাভাবিক সংরক্ষন নিরোধক ক্ষমতা থাকে। ওই অংশের ভিজে ভাবও সেইজন্য ।
@ কোনও কোনও কন্যাশিশুর জন্মের প্রথম দশ দিনে লিউকোরিয়া দেখা দেয় । মায়ের শরীরের অতিরিক্ত স্ত্রী-হরমোন থাকে, তার প্রভাবেই এমন হয়।
@ বয়ঃসন্ধিতে প্রজনন অংগে অর্থাৎ ইউটেরাস, ওভারি ও ভ্যাজাইনায় অতিরিক্ত রক্ত চলাচলের জন্য লিউকোরিয়া হয়।
@ পিরিয়ড শুরু হওয়ার দু,তিনদিন আগে লিঊকোরিয়া হতে পারে।
@ ওভিউলেশন বা ডিম্ভানু বার হওয়ার সময় সাধারনত পিরিয়ডের ১৪ দিনের মাথায় সাদা স্রাব হওয়া স্বাভাবিক।
@ যৌন উত্তেজনা বা অতিরিক্ত আবেগেও সাদা স্রাব হতে পারে।
@ গর্ভাবস্থায় মায়ের শ্রীরে ইস্ট্রোজেনের আধিক্যের জন্য লিউকোরিয়া হয়।
@ ডেলিভারির পর দেড় মাস থেকে তিন মাস পর্যন্ত সাদা স্রাব স্বাভাবিক।

বয়ঃসন্ধির আগে বা মেনোপজের পর যোনির সংক্রমন রোধের স্বাভাবিক ক্ষমতা কমে যায়। তখন সংক্রমন হওয়া সহজ। যোনির এই ক্ষরন স্বাভাবিক, কিন্তু কোনও রোগের কারনে তা বাড়তে পারে। অপুষ্টি, বিবাহিত জীবনের অশান্তি ও মানসিক কারনে সাদা স্রাব বাড়তে পারে। ক্রিমিও স্রাব বাড়ানোর কারন হতে পারে। এ ছাড়া স্বাভাবিক পরিচ্ছনতা বজায় না রাখলে, অন্তরবাস ভাল করে ধুয়ে শুকিয়ে ইস্ত্রি করে না নিলে, পারিপারশ্বিক পরিচ্ছন্নতা বজায় না থাকলে সংক্রমন হয়ে বিশি স্রাব হওয়া আশ্চর্য নয়। হস্তমৈথুন বা ম্যাস্টারবেশনও এর একটি কারন। এ ছাড়া যোনিতে ছত্রাক বা পরজীবীর সংক্রমন হতে পারে। সংক্রমন হলে চুলকানি থাকবে। ডাইয়াবেটিস রোগ থাকলে, দীর্ঘদিন এন্টিবায়োটিক খেলেও এই সংক্রমনের সম্ভাবনা বাড়ে। লিউকোরিয়ার আরও কারন হিসাবে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমন, টিউবারকুলোসিস ইত্যাদির জন্য প্রজানন অংগের ইনফেকশন, তলপেটের প্রদাহ,জন্মনিরোধ বড়ি খাওয়া ইত্যাদিকে ও চিহ্নিত করা যেতে পারে।

চিকিৎসাঃ
@ পরিচ্ছন্নতাঃ শারীরিক ও পারিপার্শ্বিক। বাথরুম বিশেষভাবে পরিস্কার ও জীবানুশুন্য থাকা দরকার।
@ ওরাল পিলের জন্য হচ্ছে মনে হলে ডক্তারকে বলে কিছুদিন তা বিন্ধ রাখতে হবে।
@ বিভিন্ন ওষুধ আছে , চিকিৎসকের পরামরশে খেতে/ব্যবহার করতে হবে।
@ প্রজনন অংগের টিউমার বা অন্য রোগ থাকলে তার চিকিৎসা দরকার।
@ স্রাবের রঙ পানির মত সাদা হলে ভয়ের কিছু নাই ।কিন্তু রঙ লাল বা হলুদ , গন্ধ বা চুলকানি থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।

undefined undefined undefined

0 comments:

Post a Comment

Blog Archive

Recent Posts

Categories

Unordered List

Sample Text

Pages