নারী মনের ভাবনা

  1. প্রচুর জল পেলে গভীর মাটির তলাকার বীজ যেমন অন্কুরিত হয়, তেমনি মেয়েদের কোমল হাতের স্পর্শে পুরুষের মনের ভাবনারাও অনায়াসে অন্কুরিত হয়ে অবিলম্বে ডালপালা মেলে ভাষার ফুলে ফুটে উঠে। আমি বিশ্বাস করি না অপরিচিত কোনো পুরুষকে মেয়েরা বিয়ের দিন থেকে ভালবাসতে পারে। যেহেতু স্বামী তাই ভালবাসতেই হবে এমন বোধ বাঙালী মেয়েদের মধ্যে ঢোকানো হয়ে থাকে কিন্তু সেটা স্বাভাবিক নয়। হয়তো এক সঙ্গে থাকতে থাকতে এক সময় ভালবাসা তৈরী হয় কারো কারো ক্ষেত্রে কিন্তু বেশীর ভাগই পরস্পরকে মেনে নিয়ে দীর্ঘকাল যাপন করেন।মেনে না নিয়ে বলে মানিয়ে নিয়ে বলাটাই সঠিক। সে ক্ষেত্রে নারীর প্রথম ভালবাসা অবশ্যই তার সন্তান। অনেক সুখ, অনেক উদ্বেগ এবং প্রচন্ড যন্ত্রনা দিয়ে নিজস্ব যে মানুষটিকে নারী পৃথিবীতে নিয়ে এল তার বদলে সে পেল ভালবাসার স্বাদ। আবার স্বামীর যৌন আচরণ বাধ্য হয়ে মেনে নিতে হয়েছে যে নারীকে সে কিছুতেই সন্তানকে নিজের বলে ভাবতে পারে না। ভালবাসার জন্মের পেছনে সুস্থতা দরকার। পৃথিবীর মায়েরা তাদের সন্তানদের ভালবাসেন এই ভালবাসার প্রকাশ কত সহজে বোঝা যায়। কিন্তু একমাত্র যত্ম করা অথবা কথা শোনা ছাড়া সন্তানরা তাদের মাকে ভালবাসছে বোঝবার উপায় নেই। একবার কাউকে ভালবাসলে আজীবন তাকে ভালবাসতেই হবে? মনে ভালবাসা আর না এলেও! ধরো গোলাপ যখন ফুটেছে তখন তোমার খুব ভাল লাগল। সেই গোলাপের সব পাপড়ি যখন একে একে খসে পড়ছে তখনও কি সেই ভাললাগাটা আঁকড়ে রাখতে পারবে?
    মেয়েরা গনেশের মত, দুর্গার চারপাশে পাক দিয়ে যে জগৎ দেখে তাতেই তৃপ্তি আর পুরুষরা কার্তিকের মতো সারা পৃথিবী ঘুরে আসে অথচ কি দেখে তা তারাই জানে না । মেয়রা প্রথমবার যার প্রেমে পড়ে তাকে ঘৃনা করলেও ভুলে যেতে পারে না। পরিস্কার জল কাগজে পড়লে দেখবেন শুকিয়ে যাওয়ার পরেও দাগ রেখে যায়। কোনো মেয়েই খারাপ হয় না। পুরুষরাই তাদের খারাপ করে। কিন্তু খারাপ হয়ে যাওয়ার পর তারা আর ভাল হতে চায় না সহজে। অবশ্য সবার ক্ষেত্রে নয়, কিছু ব্যতিক্রমও যে নেই তা নয়।
    বুদ্ধিমান মাত্রই জানেন, মেয়েদের দেখা যায় না, শোনা যায়। প্রকৃতির নিয়মই হলো স্ত্রী প্রানীর চেয়ে পুরুষ প্রানী বেশী সুন্দর। অতএব সৌন্দর্য দেখার জন্য মেয়েদের লক্ষ্যবস্তু কারার কোনো যুক্তি নেই। পুরুষদের ভাললাগে বলেই মেয়েরা সুন্দরী। মেয়েরা যে পাত্রে থাকে, জলের মতো সেই পাত্রের চেহারা নেয়, আমি কিন্তু তা মানি না। মেয়েরা যাকে শ্রদ্ধা করে, ভালোবাসে শুধু তার কাছেই মাথা নিচু করে থাকতে চায়। আবার যে এক বার মাথা নোয়ায় তাকে সমাজ কখননোও মাথা উঁচু করতে দেয় না। ঈশ্বর মেয়েদের শরীর আলাদা করে গড়েছেন। প্রাকৃতিক প্রয়োজন মেটাতে যা যা দরকার, ভেতরে বাইরে তার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেননি। মেয়েদের তিনি আরো একটি জিনিস দিয়েছেন, সেটা অনুভূতি। তীব্র, তীক্ষ্ম। স্বামী যদি মিথ্যা কথা বলে, তাহলে স্ত্রীর মনে সেই কারনে অস্বস্তি হয়। ছেলেদের মনের কথা মেয়েদের পুরোপুরি বোঝা সম্ভব নয় বলেই বোঝে না, কিন্তু একটু এদিক সেদিক হলেই তাদের অস্বস্তি হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে মেয়েরা যত শিক্ষিতই হোক, অবচেতন মনে নিজেদের আসবাব বা খাদ্যসামগ্রী বলে মনে করে। এই মেয়েরা মানে অবশ্যই তামাম নারীকুল নন, ব্যতিক্রম আছেই, তাদের কথা বলছি না। সহবাসের সময় তারাও তো কম উপভোগ করে না। কিন্তু পরবর্তীকালে অযত্ম পেলেই নিজেকে পুরুষের ব্যবহৃত সামগ্রী হিসাবে ভেবে বসেন। এটা ভাবা মোটেও ঠিক না । কারন সমাজ তথা রাষ্ট্রীয় উন্নয়নে নারীর ভূমিকাকে ছোট করে দেখার কোন অবকাশ আছে বলে আমি মনে করি না। সবচেয়ে বড় কথা হলো নারীরা মায়ের জাত। পৃথিবীর সমস্ত পুরুষই কোন না কোন নারীর গর্ভ থেকে এসেছে।

0 comments:

Post a Comment

Recent Posts

Categories

Unordered List

Sample Text

Pages