জরায়ু নিচে নেমে আসা

মেয়েদের জরায়ু তার স্বাভাবিক অবস্থান থেকে যোনিপথে নিচের দিকে নেমে আসাকে জরায়ুর নিম্নমুখিতা বা জরায়ু নিচে নেমে আসা বলে৷

জণ্মগত কারণ

* জরায়ুর সন্ধিবন্ধনীগুলো জণ্মগতভাবে দুর্বল থাকলে
* জণ্মগতভাবে দীঘাᐂকৃতি জরায়ুর মুখ
* জণ্মগতভাবে ছোট আকৃতির যোনিপথ
* জরায়ু পিছনে হেলে থাকলে (স্বাভাবিক অবস্থায় জরায়ু সামনের দিকে ঝুঁকে থাকে)
* জণ্মগতভাবেই জরায়ুর বাইরে বেরিয়ে থাকা অবস্থা

সাধারণ কারণ

* কম সময়ের ব্যবধানে অধিক সন্তান জণ্মদানের ফলে জরায়ুর শক্তিবন্ধনী দুর্বল হয়ে পড়ে
* সন্তান প্রসবের সময় অদক্ষ হাতে জরায়ুর মুখ খোলার আগেই জণ্মনালী ধরে টানা হেঁচড়া করা
* দীর্ঘ সময় প্রসব যন্ত্রণা ভোগ করা
* তাড়াতাড়ি প্রসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করানোর জন্য গর্ভফুল ধরে টানাটানি করা
* প্রসবের পর মায়ের পরিপূর্ণ যত্ন না নেওয়া
* দীর্ঘদিনের কাশি, কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে
* জরায়ুতে টিউমার হলে
* ঘন ঘন ভারী জিনিসপত্র উত্তোলনের কাজ করলে
* অপুষ্টির কারণে
* প্রসবের পর ভারী কোন কাজ করলে৷ যেমন : ঢেঁকি পার দেওয়া, ভারী কলস বহন করা ইত্যাদি৷

লক্ষণ

* রোগীর মনে হয় যোনিপথে কী যেন বেরিয়ে আসতে চাইছে
* যোনিপথে অস্বস্তি ভাব
* হাঁটলে ব্যথা হওয়া অথচ শুয়ে পড়লেই ব্যথা মিলিয়ে যাওয়া
* যোনিপথ এবং জরায়ু গ্রীবায় পানি স্ফীতির কারণে সেখানে রক্তহীনতাজনিত ঘা দেখা দেয়
* অনেক সময় পুঁজ, রক্ত বা রক্তযুক্ত ক্ষরণ দেখতে পাওয়া যায়
* জরায়ুর সঙ্গে মূত্রথলি বেরিয়ে এলে প্রস্রাবজনিত অসুবিধা প্রকট আকারে দেখা যায়
* জরায়ুর সঙ্গে পায়ুপথ আক্রান্ত হলে মলত্যাগেও অসুবিধা দেখা দিতে পারে
* যৌনসঙ্গমের সময় কষ্ট হয়৷

চিকিত্‌সা
এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অপারেশন করতে হবে৷ এতে পরবর্তী সময়ের অনেক জটিলতা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে৷

প্রতিরোধ

* গর্ভাবস্থায় মাকে পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে৷
* গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যেতে হবে৷
* গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শমত স্বাস্থ্যসম্মত অবস্থায় থাকতে হবে
* ডাক্তার অথবা দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রী দ্বারা সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা করাতে হবে৷
* প্রসব একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া৷ অযথা শিশু বা গর্ভফুল প্রসব করানোর সময় টানাটানি করা যাবে না৷
* প্রসবের প্রথম ধাপে জরায়ুর মুখ সম্পূর্ণরূপে না খুললে মাকে চাপ দেওয়ার জন্য বলা যাবে না৷
* প্রসবের পর তিন মাস মাকে ভারী কোনও কাজ করতে দেয়া যাবে না৷ যেমন: ঢেঁকি পার দেওয়া, কাঠ কাটা, ভারী কলস বহন করা ইত্যাদি৷
* প্রসবের পর কোষ্ঠকাঠিন্য হলে চিকিত্‌সা করাতে হবে৷

0 comments:

Post a Comment

Blog Archive

Recent Posts

Categories

Unordered List

Sample Text

Pages