যোনিপথে প্রদাহ
|
একজন মহিলার যৌনিপথে সাধারণত ট্রাইকোমোনাস ভেজাইনালিস নামক পরজীবীর সংক্রমণ
ঘটে থাকে। ক্যানডিডা এলবিকানস নামক এক প্রকার ফাংগাসজনিত সংক্রমণও দেখা
দিতে পারে। এছাড়া একজন মহিলা যৌন-উপায়ে সংক্রমিত বিভিন্ন রোগ যেমন-গনোরিয়া,
সিফিলিস ইত্যাদি রোগের জীবাণু দ্বারাও আক্রান্ত হতে পারেন। যেসব মহিলা
গনোরিয়ায় আক্রান্ত হন তাদের মধ্যেও শতকরা পঞ্চাশ থেকে ষাটজন একইসঙ্গে
প্রাইকোমোনাস ভেজাইনালিস নামক পরজীবী দ্বারাও সংক্রমিত হয়ে থাকেন।
সংক্রমণ কোন বয়সে বেশি হয়?
একটি মেয়ের জন্মের পর থেকে তার জীবদ্দশার যে কোন সময় ভেজাইনাইটিস বা যোনিপথে প্রদাহ বা সংক্রমণ হতে পারে। এ রোগ সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় যুবতী বয়সে-কারণ, রোগটি একটি যৌনরোগ। তাই কোনভাবে স্বামী সংক্রমিত হলে স্ত্রীও হয় ভুক্তভোগী। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো একজন পুরুষ ট্রাইকোমোনাস ভেজাইনালিস দ্বারা সংক্রমিত হলেও সে সাফার করে না বা রোগভোগের যন্ত্রণা তাকে সহ্য করতে হয় না। পুরুষ শুধু এ রোগের জীবাণুর বাহক এবং নিজের অজান্তেই তার স্ত্রীকে সংক্রমিত করে।
কি কি জীবাণু দ্বারা যৌনিপথে সংক্রমণ ঘটে?
১. ট্রাইকোমোনাস ভেজাইনালিস নামক এক ধরনের প্যারাসাইট বা পরজীবী।
২. ক্যানডিডা এলবিকানা নামক এক প্রকার ফাংগাস বা ছত্রাক। যৌনিদ্বারের ভেতরে এ পরজীবীগুলোর সঙ্গে আরো কিছু জীবাণু একত্রে বসবাস করে এবং সংক্রমণে সাহায্য করে।
সংক্রমণ ও প্রদাহ কিভাবে বিস্তার লাভ করে?
সাধারণত স্বামীর সংক্রমণ থাকলে যৌনসঙ্গমের সময় স্ত্রী সংক্রমিত হয় জীবাণু সংক্রমণের তিন থেকে আটাশ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। আগেই বলেছি, স্বামী রোগের বাহক হলেও তার রোগ দেখা দেয় না। তাছাড়া সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহৃত তোয়ালে, কাপড়, বিছানার চাঁদর, বাথটাব, এমন কি সুইমিং পুলে ও সংক্রমিত পানির সাহায্যেও এ প্রকার সংক্রমণ হয়ে থাকে। ট্রাইকোমোনাস ইনফেকশন মাসিক ঋতু¯্রাবের পর পর দেখা দিতে পারে। কারণ মাসিক ঋতু¯্রাবের সময় ভেজাইনার পরিবেশ তথা রক্তমিশ্রিত রসক্ষরণের ফলে সৃষ্ট অবস্থা জীবাণু বা প্যারাসাইটের বংশবিস্তারের জন্য খুবই উপযোগী হয়ে থাকে।
যোনিপথে প্রদাহ ও সংক্রমণের উপসর্গ কি?
১. এ রোগের প্রথম দিকে যোনিপথে অতিরিক্ত রস নিঃসৃত হয়। অনেক ক্ষেত্রে এ নিঃসৃত রস পুঁজমিশ্রিত থাকে। এছাড়া নিঃসৃত রস অনেক সময় ক্রিম রঙের হয়ে থাকে এবং অতিরিক্ত পরিমাণে নিঃসৃত কিংবা ফেনাযুক্ত হয়।
২. এ প্রকার প্রদাহ বা ইনফেকশনে যোনি পথে মাত্রাতিরিক্ত চুলকানি হয় অনেকক্ষেত্রে চুলকানি এত বেশি হয় যে রোগিণী যোনিপথের ঝিল্লি নখের আঘাত ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলে এবং পরবর্তীকালে ওই স্থানে প্রচ- জ্বালা করে।
৩. এ সংক্রমণ ও প্রদাহ থাকলে স্বামী সহবাসে অসহ্য ব্যথা ও জ্বালা যন্ত্রণা অনুভব হয় এবং অনেকক্ষেত্রে এটা একটা পারিবারিক অশান্তির কারণ হয়। অনেক সময় যোনিপথের বাইরের ও ভেতরের অংশ পুরোপুরি ফুলে ওঠে এবং টক টকে লাল হয়ে ওঠে।
রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা হবে যেভাবে
ভেজাইনাতে চুলকানি ও মাত্রাতিরিক্ত রস নিঃসরণ থেকে প্রাথমিক ডায়াগনোসিস করা সম্ভব। তবে যোনিপথের নিঃসৃত রস পিপেটের সাহায্যে সংগ্রহ করে ব্যাকটিরিওলজিক্যাল পরীক্ষা করালে এবং কালচার ও সেনসিটিভিটি টেস্ট করালে জীবাণু সঠিকভাবে নিরুপণ করা সম্ভব। একই সঙ্গে ইউরেথ্রা বা মূত্রদ্বার থেকে নিঃসৃত রস ও পুঁজ সংগ্রহ করে টেস্ট করাতে হবে। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একই সঙ্গে গনোরিয়া সংযুক্ত থাকে। ট্রাইকোমোনিয়াসিসের জন্য মেট্টোডাজল ২০০ মিলিগ্রামের একটি করে ট্যাবলেট দিনে তিনবার সাতদিন খেতে, হবে অর্থাৎ দৈনিক তিনটি করে সাতদিনে মোট ২১টি ট্যাবলেট খেতে হবে। একই চিকিৎসা স্ত্রী এবং স্বামী উভয়কে একসঙ্গে নিতে হবে অর্থাৎ স্বামীকেও একই সঙ্গে ওষুধ খেতে হবে, যদিও তার কোন রোগলক্ষণ নাই। তা নাহলে স্বামী বাহক থেকে যাবে এবং পুনরায় যৌনসঙ্গমের মাধ্যমে স্ত্রী সংক্রমিত হবে। ক্যাডিডিয়াসিসের বা ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে যোনিপথে নিসট্যাটিন পেসারি বা লোকাল অ্যাপলিকেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা করাতে হবে। এ ক্যানডিডিয়াসিসের সঙ্গে ডায়াবেটিস রোগ ওতপ্রোতভাবে যুক্ত থাকার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে দুটো চিকিৎসা পাশাপাশি চালাতে হবে।
প্রফেসর ডা: সুলতানা জাহান বাড়ি নং-৮১, রোড নং-৮/এ,
মোবাইল : ০১৯১৪২০৪৩০১
সংক্রমণ কোন বয়সে বেশি হয়?
একটি মেয়ের জন্মের পর থেকে তার জীবদ্দশার যে কোন সময় ভেজাইনাইটিস বা যোনিপথে প্রদাহ বা সংক্রমণ হতে পারে। এ রোগ সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় যুবতী বয়সে-কারণ, রোগটি একটি যৌনরোগ। তাই কোনভাবে স্বামী সংক্রমিত হলে স্ত্রীও হয় ভুক্তভোগী। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো একজন পুরুষ ট্রাইকোমোনাস ভেজাইনালিস দ্বারা সংক্রমিত হলেও সে সাফার করে না বা রোগভোগের যন্ত্রণা তাকে সহ্য করতে হয় না। পুরুষ শুধু এ রোগের জীবাণুর বাহক এবং নিজের অজান্তেই তার স্ত্রীকে সংক্রমিত করে।
কি কি জীবাণু দ্বারা যৌনিপথে সংক্রমণ ঘটে?
১. ট্রাইকোমোনাস ভেজাইনালিস নামক এক ধরনের প্যারাসাইট বা পরজীবী।
২. ক্যানডিডা এলবিকানা নামক এক প্রকার ফাংগাস বা ছত্রাক। যৌনিদ্বারের ভেতরে এ পরজীবীগুলোর সঙ্গে আরো কিছু জীবাণু একত্রে বসবাস করে এবং সংক্রমণে সাহায্য করে।
সংক্রমণ ও প্রদাহ কিভাবে বিস্তার লাভ করে?
সাধারণত স্বামীর সংক্রমণ থাকলে যৌনসঙ্গমের সময় স্ত্রী সংক্রমিত হয় জীবাণু সংক্রমণের তিন থেকে আটাশ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। আগেই বলেছি, স্বামী রোগের বাহক হলেও তার রোগ দেখা দেয় না। তাছাড়া সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহৃত তোয়ালে, কাপড়, বিছানার চাঁদর, বাথটাব, এমন কি সুইমিং পুলে ও সংক্রমিত পানির সাহায্যেও এ প্রকার সংক্রমণ হয়ে থাকে। ট্রাইকোমোনাস ইনফেকশন মাসিক ঋতু¯্রাবের পর পর দেখা দিতে পারে। কারণ মাসিক ঋতু¯্রাবের সময় ভেজাইনার পরিবেশ তথা রক্তমিশ্রিত রসক্ষরণের ফলে সৃষ্ট অবস্থা জীবাণু বা প্যারাসাইটের বংশবিস্তারের জন্য খুবই উপযোগী হয়ে থাকে।
যোনিপথে প্রদাহ ও সংক্রমণের উপসর্গ কি?
১. এ রোগের প্রথম দিকে যোনিপথে অতিরিক্ত রস নিঃসৃত হয়। অনেক ক্ষেত্রে এ নিঃসৃত রস পুঁজমিশ্রিত থাকে। এছাড়া নিঃসৃত রস অনেক সময় ক্রিম রঙের হয়ে থাকে এবং অতিরিক্ত পরিমাণে নিঃসৃত কিংবা ফেনাযুক্ত হয়।
২. এ প্রকার প্রদাহ বা ইনফেকশনে যোনি পথে মাত্রাতিরিক্ত চুলকানি হয় অনেকক্ষেত্রে চুলকানি এত বেশি হয় যে রোগিণী যোনিপথের ঝিল্লি নখের আঘাত ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলে এবং পরবর্তীকালে ওই স্থানে প্রচ- জ্বালা করে।
৩. এ সংক্রমণ ও প্রদাহ থাকলে স্বামী সহবাসে অসহ্য ব্যথা ও জ্বালা যন্ত্রণা অনুভব হয় এবং অনেকক্ষেত্রে এটা একটা পারিবারিক অশান্তির কারণ হয়। অনেক সময় যোনিপথের বাইরের ও ভেতরের অংশ পুরোপুরি ফুলে ওঠে এবং টক টকে লাল হয়ে ওঠে।
রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা হবে যেভাবে
ভেজাইনাতে চুলকানি ও মাত্রাতিরিক্ত রস নিঃসরণ থেকে প্রাথমিক ডায়াগনোসিস করা সম্ভব। তবে যোনিপথের নিঃসৃত রস পিপেটের সাহায্যে সংগ্রহ করে ব্যাকটিরিওলজিক্যাল পরীক্ষা করালে এবং কালচার ও সেনসিটিভিটি টেস্ট করালে জীবাণু সঠিকভাবে নিরুপণ করা সম্ভব। একই সঙ্গে ইউরেথ্রা বা মূত্রদ্বার থেকে নিঃসৃত রস ও পুঁজ সংগ্রহ করে টেস্ট করাতে হবে। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একই সঙ্গে গনোরিয়া সংযুক্ত থাকে। ট্রাইকোমোনিয়াসিসের জন্য মেট্টোডাজল ২০০ মিলিগ্রামের একটি করে ট্যাবলেট দিনে তিনবার সাতদিন খেতে, হবে অর্থাৎ দৈনিক তিনটি করে সাতদিনে মোট ২১টি ট্যাবলেট খেতে হবে। একই চিকিৎসা স্ত্রী এবং স্বামী উভয়কে একসঙ্গে নিতে হবে অর্থাৎ স্বামীকেও একই সঙ্গে ওষুধ খেতে হবে, যদিও তার কোন রোগলক্ষণ নাই। তা নাহলে স্বামী বাহক থেকে যাবে এবং পুনরায় যৌনসঙ্গমের মাধ্যমে স্ত্রী সংক্রমিত হবে। ক্যাডিডিয়াসিসের বা ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে যোনিপথে নিসট্যাটিন পেসারি বা লোকাল অ্যাপলিকেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা করাতে হবে। এ ক্যানডিডিয়াসিসের সঙ্গে ডায়াবেটিস রোগ ওতপ্রোতভাবে যুক্ত থাকার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে দুটো চিকিৎসা পাশাপাশি চালাতে হবে।
প্রফেসর ডা: সুলতানা জাহান বাড়ি নং-৮১, রোড নং-৮/এ,
মোবাইল : ০১৯১৪২০৪৩০১
0 comments:
Post a Comment