মেয়ের শরীরে মায়ের জরায়ু
|দুজনেরই বয়স ৩০। একজনের জন্ম জরায়ু ছাড়াই। আরেকজন জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। চিকিৎসা চলাকালে তাঁর জরায়ু কেটে ফেলতে হয়।
সুইডেনের বাসিন্দা এই দুই নারী ভিন্ন পরিবারের হলেও তাঁদের ভাবনা ছিল অভিন্ন। তা হলো নিজের ভ্রূণে মাতৃত্ব অর্জন। এবার সেই ভাবনার অবসান ঘটালেন তাঁদেরই মা। মেয়ের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হলো মায়ের জরায়ু। চিকিৎসকদের দাবি, বিশ্বে মায়ের জরায়ু মেয়ের শরীরে প্রতিস্থাপনের এমন ঘটনা এই প্রথম। তবে মা ও মেয়েদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
গতকাল মঙ্গলবার জরায়ু প্রতিস্থাপনের এ খবর দিয়েছে সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়। আর জরায়ু প্রতিস্থাপনে অস্ত্রোপচারের কাজটি সম্পন্ন হয়েছে গত সপ্তাহে। অংশ নেন ১০ জনের বেশি শল্যচিকিৎসক। নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ত্রীরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ম্যাটস ব্রায়েনস্ট্রোয়েম। তিনি জানান, কোনো জটিলতা ছাড়াই এই কাজটি তাঁরা করতে পেরেছেন। শরীরে জরায়ু প্রতিস্থাপনের পর মেয়ে দুজন সুস্থ আছেন। কিন্তু অস্ত্রোপচারের কারণে তাঁরা শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল।
তবে জরায়ু প্রতিস্থাপনের ঘটনাটি পুরোপুরি সফল বলতে নারাজ চিকিৎসক দলের সদস্য মাইকেল ওলোসন। তিনি বলেন, তাঁরা সন্তান ধারণ না করা পর্যন্ত এই জরায়ু প্রতিস্থাপনকে সফল বলা যাবে না।
চিকিৎসকেরা বলছেন, এক বছর পর্যবেক্ষণের পরই কেবল বলা যাবে তাঁরা হিমায়িত ভ্রূণ গর্ভধারণে সক্ষম কি না।
আর যাঁরা তাঁদের সন্তানের মাতৃত্ব ফিরিয়ে দিলেন, তাঁরা কেমন আছেন? অধ্যাপক ব্রায়েনস্ট্রোয়েম বললেন, মায়েরাও সুস্থ। হাঁটাচলা করতে পারছেন। কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁরা বাড়িতে ফিরে যেতে পারবেন।
ব্রায়েনস্ট্রোয়েম বলেন, জরায়ু প্রতিস্থাপনে আগ্রহী ১০ জন নারীর ওপর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তাঁদের ভেতর পাঁচ থেকে ছয়জনই এই পদ্ধতির চিকিৎসা নিতে সক্ষম হবেন।
জরায়ু প্রতিস্থাপনের ঘটনা নতুন নয়। গত বছর ৯ আগস্ট তুরস্কের আকদেনিজ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের চিকিৎসক ড. ওমর ওজকানের তত্ত্বাবধানে সফলভাবে প্রথম জরায়ু প্রতিস্থাপন হয়। জরায়ু ছাড়া জন্ম নেওয়া ২১ বছর বয়সী তুর্কি নারীর শরীরে সেটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। তখন এক মৃত ব্যক্তির শরীর থেকে জরায়ুটি নেওয়া হয়। সন্তানের জন্ম না হওয়া পর্যন্ত ওই প্রতিস্থাপন সফল কি না বলা যাবে না।
এর আগে ২০০০ সালে সৌদি আরবে জরায়ু প্রতিস্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিন মাস পর সেটি সরিয়ে ফেলতে হয়। এএফপি ও বিবিসি।
0 comments:
Post a Comment