মহিলাদের গর্ভকালীন যত্ন



একজন নারীর কাছে মা হবার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। শত কষ্টের মাঝেও একজন নারী তার গর্ভকালীন সময়ে একধরনের সুখের অনুভূতি নিয়ে সময় পার করে। গর্ভকালীন সময়ে কিছু নিয়ম মেনে চললে নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত হয়।
প্রথম তিন মাস:
মাসিক বন্ধ হলে ডাক্তারের পরামর্শে প্রস্রাব এবং রক্ত পরীক্ষা করে আপনি সন্তান সম্ভবা কিনা তা নিশ্চিত করুন।
মাথা ঘোরানো, বমি বমি ভাব হলে ঘাবড়ানোর কিছু নাই। বিশ্রাম নেবেন।
খাবার অরুচি হলেও পর্যাপ্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
ফলিক এসিড সেবণে বাচ্চার মস্তিষ্ক সুগঠিত হয়।

তিন থেকে সাত মাস:
প্রথম তিন মাসের উপসর্গ কমে আসে।
তিন থেকে পাঁচ মাসের ভেতরে বাচ্চার নড়াচড়া অনুভব করতে পারেন। এসময় একবার ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।
পাঁচ মাসের পর পেট দ্রুত বাড়তে থাকে। এসময় আরামদায়ক ঢিলেঢালা কাপড় পড়বেন।
ক্ষুধা বাড়তে পারে। বেশী করে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। স্বাভাবিক ও সহজে হজমযোগ্য সুষম খাবার খাওয়াই শ্রেয়।
তেলযুক্ত, ভাজা পোড়া খাবার বর্জন করুন।
শাক সবজি, ফলমূল বেশী খাবেন।
ছোটমাছ, হাড় খাবেন যা একসময় ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করবে।
দুঃচিন্তা করবেন না। ভাল করে ঘুমাবেন।
বাচ্চার নড়াচড়া হঠাত্ বন্ধ হলে দেরী না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।
জরায়ু দিয়ে রক্ত বা পানি আসলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

সাত থেকে নয় মাস:
পায়ে পানি আসলে, ফুলে গেলে ভয় না পেয়ে কোন স্বাস্থ্য কর্মী বা ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
আরামদায়ক কাপড় এবং জুতা পরুন।
হাটাহাটি করতে পারেন কিন্তু ভারী কাজ করা যাবেনা।
রক্তের গ্রুপ করিয়ে নিন এবং আত্মীয়স্বজন বা বন্ধু বান্ধবদের রক্তের সাথে গ্রুপ ম্যাচিং করিয়ে নিন যেন প্রয়োজনে রক্ত সহজলভ্য হয়।
আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে প্রসবব্যাথা উঠার সাথে সাথে আপনার করণীয় নিশ্চিত করুন।
কোথায় ডেলিভারী করাবেন? প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র তৈরী রাখবেন আপনার ডাক্তারই এ ব্যাপারে আপনাকে পরামর্শ দেবেন।
তলপেটে ব্যাথা, শক্ত হওয়া, কোমড় ব্যাথা, বারবার ব্যাথা উঠা, রক্ত মিশ্রিত স্রাববের হওয়া প্রসব বেদনা লক্ষণ।

আরো কিছু করণীয়:
স্বাভাবিক কাজ করা যায় কিন্তু কাপড় কাঁচা, ঘরমোছা, ভারী জিনিস তোলা থেকে বিরত থাকুন।
প্রথম তিন মাস এবং শেষ ১ মাস ঝাঁকি বেশী হয় এমন ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন।
প্রথম তিসমাস এবং শেষের ১ মাস সহবাস না করা ভাল।
ডাক্তারের পরামর্শে টিটেনাস ইনজেকশন নিয়ে নিতে হবে।
গর্ভাবস্থায় অন্তত ৪ বার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চেক আপ কারবেন (১৬,২৮,৩২ এবং ৩৬ সপ্তাহ)।

পরিশেষে বলতে হয়, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও গর্ভবতী মহিলার যত্ন নেয়া প্রয়োজন। সকলের সহযোগীতায় গর্ভবতী নারীর নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত হয়।

0 comments:

Post a Comment

Blog Archive

Recent Posts

Categories

Unordered List

Sample Text

Pages